ট্রায়ালের আগেই ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র দিতে পারে ভারতও - live tv online

ট্রায়ালের আগেই ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র দিতে পারে ভারতও

নয়াদিল্লী, ২১ আগস্ট - গত মাসের শুরুর দিকে হইচই ফেলে দিয়েছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) মহাপরিচালক বলরাম ভার্গবের এক পাতার একটি চিঠি। তাতে জল্পনা ছড়ায়, স্বাধীনতা দিবসে কি তাহলে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরির সুখবর দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই চিঠির পর ভারতে বিতর্ক শুরু হলেও ১৫ আগস্ট মোদি কোনও চমকের ঘোষণা দেননি। কিন্তু ভার্গবেরই নতুন এক মন্তব্যে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ বার তিনি জানিয়েছেন, ভারতে তৈরি সম্ভাব্য দুটি ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল প্রায় শেষ। সরকার চাইলে এখন জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দিতে পারে। সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এ খবর জানিয়ে বলছে, বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভার্গব। ওই বৈঠকে উপস্থিত এক সাংসদ জানিয়েছেন, ভার্গবকে বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আর কতদিন এই মহামারি পরিস্থিতিতে থাকতে হবে মানুষকে? আইসিএমআর মহাপরিচালক জানান, সম্ভাব্য দুটি ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল প্রায় শেষ। সাধারণত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হতে ন্যূনতম ৬ থেকে ৯ মাস লাগে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে জরুরি ভিত্তিতে (ইমার্জেন্সি অথোরাইজেশন) ছাড়পত্র দেয়ার কথা ভাবতে পারে। প্রতিষেধক দুটি তৈরি করছে ভারত বায়োটেক এবং জাইডাস ক্যাডিলা। এ ছাড়া অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা করছে সিরাম ইনস্টিটিউট। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার নেতৃত্বে চার ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠকটি। করোনা পরিস্থিতির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। ভার্গবের ওই মন্তব্যে অনেকেরই প্রশ্ন, সত্যিই কি ট্রায়াল সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দিয়ে দেবে সরকার? নাকি এমন আশ্বাস দিয়ে বিহারের আসন্ন নির্বাচনে সরকার ফায়দা নিতে চাইছে? অনেকে বলছেন, করোনায় বেহাল অর্থনীতি নিয়ে যথেষ্ট সমালোচিত মোদি সরকার। এখন ভ্যাকসিন বাজারে আসছে এমন আশ্বাস পেলে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে। অক্টোবর-নভেম্বর থেকে আগামী বছরের শুরু পর্যন্ত উৎসবের মৌসুম। তার আগে কোনো সুখবর এলে বিক্রি বাড়বে, জোরদার হবে বাজার। এসব প্রশ্ন ওঠার কারণ একটাই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের ওপর সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের প্রভাব পরীক্ষা করা হয়। খতিয়ে দেখা হয় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও। অনেকেরই বিস্মিত প্রতিক্রিয়া, এ তো রাশিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ। গত ১১ অগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, বিশ্বে তারাই প্রথম করোনার প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলেছেন। যার নাম স্পুটনিক-ভি। কিন্তু ঘণ্টা কয়েক পরে এক রুশ মন্ত্রীর বিবৃতিতে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়নি। অর্থাৎ ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই নথিভুক্তির ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। যদিও ওই রাশিয়ার ওই ভ্যাকসিনের উদ্ভাবক মস্কোভিত্তিক গামালেয়া ইনস্টিটিউটের এক পরিচালক আজ শুক্রবার জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার ৪৫টি কেন্দ্রে ৪০ হাজার মানুষের ওপরে স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। আর তা হবে বিদেশি গবেষকদের নজরদারির মধ্যেই। এদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাশিয়া আজই জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিনটি উৎপাদন করতে চায় তারা। রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের সিইও কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, আমরা মনে করি, ভারত এটি তৈরি করতে সক্ষম। এ ধরনের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমেই চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে, এমন কেন্দ্রগুলোকে গত ২ জুলাই ভার্গবের লেখা একটি চিঠি ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল। চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটির ফাস্ট-ট্র্যাক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করতে হবে। কারণ ১৫ অগস্টের মধ্যে ভ্যাকসিন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গবেষক ও বিজ্ঞানীমহল প্রশ্ন তুলেছিল, এ ভাবে ঘাড়ে বন্দুক রেখে গবেষণা করা যায় না। তবে এরপর বিষয়টা কিছুটা থিতিয়ে যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজ্ঞানীরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ক্রমাগত তাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। সম্ভবত তারই ছায়া দেখা যাচ্ছে ভার্গবের বিভিন্ন মন্তব্যে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা এন এ/ ২১ আগস্ট

ট্রায়ালের আগেই ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র দিতে পারে ভারতও

No comments

Featured Post

Phirki Full Episode 2021

Phirki Full Episode 2021 Zee Bangla is an Indian broadcast channel for general entertainment in the Bengali language . As part of the Esse...

Powered by Blogger.